স্ত্রীকে ব্যবহার করে টাকার নেশায় বেপরোয়া ফারুক মাস্টার।
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
০৯-১২-২০২৪ ১০:৪৬:১৭ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১০-১২-২০২৪ ১১:৩৮:৩৯ অপরাহ্ন
ফারুক মাস্টার।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মহিলা সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর সাথী আক্তারের দ্বিতীয় স্বামী লজিন মাস্টার ফারুকের শৈশব কেটেছে অজোপাড়া গায়ে। দারিদ্রতার বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসার লক্ষ্যে পাড়ি জমান রাজধানীর ঢাকা শহরে। অজো পাড়া গা থেকে উঠে এসে ঢাকা শহরে লজিং মাস্টার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ছোট ছোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন রকম শিক্ষকতার পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সান্নিধ্যে আসার চেষ্টা করেন। তার অল্প বিদ্যার শিক্ষাকে পুঁজি করে মুখরোচক কথার মাধ্যমে মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিচার সালিশ নিজের উপস্থিতি ব্যবহার করে মোটামুটি একটি অবস্থান তৈরি করার চেষ্টা চালিয়ে যান। নিজের পারিবারিক অবস্থার তেমন পরিচিতি না থাকায় ঢাকা শহরে টিকে থাকাটাও তার জন্য অনেকটা দুষ্কর হয়ে পড়ে।অর্থ কষ্টের কারণে সংসারে অশান্তি সৃষ্টির একটি ধাক্কায় বিপর্যস্ত হয়ে যায় তার লালিত স্বপ্নগুলো। একপর্যায়ে নিজের স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে প্রথম স্ত্রী কে পাঠিয়ে দেন মধ্যপ্রাচ্যের দূর প্রবাসে। স্ত্রীর উপার্জিত অর্থ দিয়ে জীবন জীবিকার মাঝেও যেন স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে যায়। স্থানীয় বেশ কিছু নেতার ছত্রচ্ছায়ায় ফারুক মাস্টারের ডালপালা মেলতে থাকে।
ঢাকা ১৩ আসনের গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে মৃত সাবেক কাউন্সিলর নূরুল ইসলাম রতন স্বতন্ত্র মোরগ মার্কা নিয়ে নির্বাচনে নামেন । সুযোগ বুঝে লজিন মাস্টার ফারুক নির্বাচনী প্রচারনায় নামেন এলাকায় বিভিন্ন অলিতে গলিতে পোস্টার মারার দায়িত্ব পান এছাড়াও মিছিলে লোক ভাড়া করা ছিল তার মুল দায়িত্ব। নূরুল ইসলাম রতন সাহেবের মিটিং মিছিলে লোক ভাড়া করে হয়ে ওঠেন অনেক পরিচিত মুখ নূরুল ইসলাম রতন বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। তখন থেকেই উত্থান ফারুক মাস্টারের। এছাড়াও ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিচার সালিশের দায়িত্ব নিয়ে বিশেষ সুবিধা নিয়ে কাজ করে গেছেন এই লজিন মাস্টার। এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে লজিন মাস্টার ফারুকের মাধ্যমে তৎকালীন কাউন্সিলর বিশেষ সুবিধা পাওয়ার কারণে অনেক আস্থাভাজন হয়ে উঠেন।
কারেন্ট মিস্ত্রির মেয়ে সাথী আক্তারের শুরুতে রাজনৈতিক পদ পরিচয় না থাকলেও বিভিন্ন মিটিং মিছিলে সামনের সারিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগানে অংশগ্রহণ করত । লজিন মাস্টার ফারুকের এলাকায় ক্ষমতা ও অধিপত্য বিস্তারে বেপরোয়া
সাবেক কাউন্সিলর নুরুল ইসলামের সান্নিধ্যে আসতে এক সময়ের লজিন মাস্টারকে বেছে নেয় সাথী আক্তার। রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার লক্ষ্যে ফারুক মাস্টারের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সাথী আক্তার । শুধু তাই নয় ফারুক মাস্টার সাথীকে ব্যবহার করে তার উদ্দেশ্য হাসিলের লক্ষ্যে ঠিক তখনই ফারুক মাস্টার সুযোগ বুঝে সাথী আক্তারকে বিয়ে করে। লজির মাস্টার থেকে হয়ে যান ফারুক মাস্টার।
স্থানীয় সূত্র জানাই এক সময়ের এই লজিং মাস্টার এক জামা প্যান্ট পরে আমাদের সামনে দিয়ে যাওয়া আসা করত। চায়ের দোকানে বিল দিতে পারতো না,দু-বোলা পেট ভরে খেত কিনা সন্দেহ।জুতা তো দূরের কথা পায়ে অনেক সময় ছান্দেলও থাকত না। মানুষের ভাগ্য কোথা থেকে কি হয়ে যায়? ১০ টাকার লটারি পেয়েছে কি না এমনটিও আমাদের জানা নেই। রাজনীতি মানুষকে এত কিছু দিতে পারে? আমরা স্থানীয়, বাপ দাদার জন্ম এইখানে, প্রতি শুক্রবার এখানে গরু জবাই দেয়। আগের লজিং মাস্টার অহনকার ফারুক মাস্টার কম হলেও ১০ কেজি কইরা মাংস কিনেন, কসাই আমাদের কি কয় জানেন নি? ফারুক মাস্টারের মাংস বলে কথা সিনার মাংস আর পিছনে রানের মাংস এরে দেয়া লাগবো। এক সময় হাড্ডি খাইতে পারতো না রাজনীতি কইরা ছিনার মাংস আর পিছনের রানের মাংস খায়। এরেই কয় রাজনীতিতে ভাগ্য পরিবর্তন। একসময়ের লজিন মাস্টার অহন ফারুক মাস্টার --হাহাহা।
নাম প্রকাশের না শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, দীর্ঘ ৩৭ বছর এই এলাকাতে বসবাস করি। বাড়ি সম্পত্তি দোকান বিপুল টাকার মালিক এ ফারুক মাস্টার যা তার তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা ও রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে গড়ে তুলেছেন ঢাকা শহরে অনেক কিছুই যা অনেকেই অজানা।
স্থানীয় ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদপুরে মাদকের শীর্ষে থাকা মাদক কারবারীদের সর্পরাজ্য শীর্ষে থাকা জেনেভা ক্যাম্পের অনেক ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার সন্ধান মিলেছে ফারুক মাস্টারের স্ত্রী কাউন্সিলর সাথি আক্তার ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে। সাথী আক্তারের সাথে নেপথ্যে যুব মহিলা লীগ যার কারণে সাথী আক্তারের সাথে বিরোধে কাউন্সিলর রাষ্ট্রন।
এছাড়াও মহিলা কাউন্সিলর সাথী আক্তারের বিশেষ শক্তি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল নেপথে কারিগর ফারুক মাস্টার।
তীক্ষ্ণো বুদ্ধি সম্পন্ন ফারুক মাস্টার রিং রোড সংলগ্ন ছাপড়া মসজিদের মার্কেট নির্মাণ কাজ ও মসজিদের সভাপতির পদে আরো চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য উঠে আসে অনুসন্ধানে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে স্বাধীনতার পর গত জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি রক্ত দেখেছে বাংলাদেশ। আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্রদের দমন করতে পুলিশের পাশাপাশি মাঠে নামানো হয় র্যাব ও বিজিবি। এই আন্দোলনের সময় প্রাণহানি হয় কয়েকশ মানুষের। এসব ঘটনায় নিহত ও আহতদের মধ্যে অধিকাংশকেই গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। সড়কে শিক্ষার্থীদের লাশের সারি দেখে ঘরে বসে থাকতে পারেনি সাধারণ মানুষ, সবাই নেমে আসেন রাজপথে। অবশষে গত ৫ আগস্ট জনরোষে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।
সম্প্রতি আন্দোলনের সময় ঘটা বিভিন্ন নৃশংসতার ভিডিও সামনে আসতে শুরু করেছে। ঢাকার যেসব এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ তৎকালীন সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়, তার মধ্যে অন্যতম মোহাম্মদপুর। স্বৈরাশাসক শেখ হাসিনার নির্দেশনা পালন করার লক্ষে অনেক ঘটনায় অজানা।
টাকার নেশাই বেপরোয়া ফারুক মাস্টারের বিস্তারিত থাকছে আগামী পর্বে
নিউজটি আপডেট করেছেন : News Upload
কমেন্ট বক্স